চীন রোজা নিষিদ্ধ, বাংলাদেশেও রোজা নিষিদ্ধ করা উচিত: তসলিমা

বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন এবার রমজান সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। পবিত্র রমজান মাসে মুসলিমদের রোজা পালন করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে তসলিমা বলেন, কেন আমি রোজা রাখবো? আমি নির্বোধ নই।

আরেক টুইট বার্তায় চীনের মুসলিম অধ্যুষিত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শিনজিয়াং প্রদেশে রোজা পালনে নিষেধাজ্ঞা জারিরও সমালোচনা করেছেন তসলিমা। তিনি বলেন, ‘চীন রোজা নিষিদ্ধ করেছে। আমি নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই। আমি সেই সব দেশের বিপক্ষে; যারা লোকজনকে রোজা রাখতে বাধ্য করে’।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া অপর এক পোস্টে তসলিমা লেখেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মুসলিম না হয়েও নামাজ পড়েন, রোজা করেন। যদিও আমরা সবাই বুঝতে পারি এসব তিনি মন থেকে করেন না, মুসলিমদের ভোট পাওয়ার জন্য করেন, কিন্তু তারপরও আমি মনে করি না তার নামাজ রোজায় কারও বাধা দেওয়া উচিত। তার অধিকার আছে যে কোনও ধর্ম পালনের।

ধর্মীয় বিষয় নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য এই প্রথম নয় তসলিমা নাসরিনের। এর আগেও ইসলাম ধর্ম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেন বাংলাদেশি এই নির্বাসিত লেখিকা।

অশ্লীলতা কোনো অন্যায় নয়, বললেন তসলিমা নাসরিন! বসন্তোত্‍সবের অনুষ্ঠানে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক তরুণীদের খোলা পিঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান বিকৃত করে লেখা অশ্লীল শব্দ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। এর জেরে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন কিন্তু তরুণীর উন্মুক্ত পিঠে অশ্লীল শব্দ লেখার পক্ষে সওয়াল করলেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় তাসলিমা জানালেন, অশ্লীলতার মধ্যে কোনো অন্যায় নেই।বরং, অন্য অনেক কিছু আছে যেগুলোর মধ্যে অশ্লীলতা রয়েছে। ফেসবুকে লেখা নিজের পোস্টে মন্তব্য করেন,

ইউটিউবে গাঁজা খেয়ে বেসুরো গান গায় গালিবাজ রোদ্দুর রায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় তারও ভক্ত তৈরি হয়। একটি ভিডিওতে তো প্রায় ষাট লাখ লাইক পড়েছে যা হল বাস্তবতা। বর্তমান সময়ে সেই গালিগালাজের পক্ষেই তসলিমা।

ওই পোস্টে যে সব শব্দ ব্যবহার করেন তাসলিমা তা সাধারণ ভদ্র মানুষ উচ্চারণ করেন না। কিন্তু তসলিমা তা করেছেন। কারণ, তিনি অশ্লীলতার মধ্যে কোনো অন্যায় খুঁজে পান না।

তাই তিনি ফেসবুকে নির্দ্বিধায় লিখেছেন, ‘এইসব বাঁড়া, শালা, বাঞ্চোত শব্দগুলোকে, মূলত মানুষের তৈরি এবং ব্যবহৃত কোনো শব্দকেই রোদ্দুর রায় অশ্লীল বলে মনে করে না। সে মনে করে দারিদ্র্য অশ্লীল, প্রতারণা অশ্লীল, ঘৃণা অশ্লীল,হত্যাকাণ্ড অশ্লীল, যুদ্ধ অশ্লীল।

তসলিমা আরো লিখেছেন, ‘অশ্লীলতা ব্যাপারটা তো আসলে আপেক্ষিক, একজনের কাছে যা অশ্লীল, আরেকজনের কাছে তা অশ্লীল নয়। যে ভদ্রলোকেরা এই শব্দগুলোকে অশ্লীল বলছে তাদের অনেকে মনে মনে এইসব শব্দ বহুবার উচ্চারণ করে, অথবা এই শব্দগুলো তারা ঘরে বলে, বাইরে বলে না।

বাইরে নকল হলেও ঝলমলে একটা সমাজ তারা দেখতে চায়। ১০০ বছর আগে যেমন ভাবে মানুষ চলতো, যেমন ভাবে বলতো, তেমন ভাবে আজও চলুক বলুক চায়।

কিন্তু সমাজ তো বদলে যাচ্ছে, আগের মতো কেন থাকবে সবকিছু! বদলের চাকা কিন্তু সবসময় ওপরের দিকে ওঠে না, নীচের দিকেও গড়ায়। বদলটা মনের মতো না হলে কান্নাকাটি করার তো দরকার নেই। বুঝতে হবে এই সমাজ এই মানসিকতা হঠাত্‍ আকাশ থেকে পড়েনি। একেই আমরা সকলে মিলে একটু একটু করে তৈরি করেছি।

অশ্লীলতা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তসলিমা কলকাতা থেকে তাকে তাড়ানোর প্রসঙ্গটি তোলেন তার ফেসবুক পোস্টে। ফেসবুকে এ নিয়ে তসলিমা লেখেন, ‘কলকাতার শাসকেরা তো বাংলা অন্ত প্রাণ নিরীহ নিরপরাধ তসলিমাকে লাথি মেরে তাড়িয়ে দিয়েছে, ওই তাড়ানোর চেয়ে কি বাঁড়া শব্দটি বেশি অশ্লীল?

মানুষ এখনও অন্যায়ের ভেতর ততটা অশ্লীলতা দেখে না, যতটা দেখে দু’চারটা শব্দে, এবং অঙ্গভঙ্গিতে। খুনোখুনিতে অশ্লীলতা দেখে না, যৌনসঙ্গমে দেখে।